গ্রহ নক্ষত্র গুলো শুন্যে ভেসে আছে কিভাবে?

অনেকেরই প্রশ্ন- 

  • গ্রহ নক্ষত্র গুলো শুন্যে ভেসে আছে কিভাবে?
  • কেনোই বা তারা সূর্যকে কেন্দ্র করেই ঘুরছে?
  • কেনো তারা ছিটকে বা অন্যভাবে দূরে চলে যাচ্ছেনা?
  • আমাদের চারপাশে আমরা যে বলের বা আকর্ষন বিকর্ষনের ঘটনা দেখি এগুলো কেনো হয়?


এগুলোর মোটামুটি বিস্তারিত ব্যাখা দেওয়ার চেষ্টা করবো আজ। প্রথমেই আসি গ্রহ নক্ষত্রের ব্যাপারে। তারা ভেসে আছে কি করে?
আমরা অনেকেই হয়তো স্পেস টাইম কার্ভেচারের নাম শুনেছি। অনেকেই হয়তো কিছুটা বুঝি আবার কেউ কেউ হয়তো বুঝিনা। আসুন জিনিসটা আবার বুঝা যাক।

ধরুন আপনি একটি রাবারের পাতলা চাদরকে অনেক টান টান করে চারপাশে আটকালেন। তখন সেটা একটা সমতল পৃষ্ঠ এর ন্যায় দেখাবে। কিন্তু যদি এখন আপনি এর মধ্যে একটি ১ কেজি বা ৮০০ গ্রাম ওজনের বল রাখেন।তাহলে সেই বলটি উক্ত চাদরকে বাকাবে এবং একটু গর্তের ন্যায় তৈরি করবে।

এখন কথা হচ্ছে, যদি আপনি ঐ চাদরের একদম উপরে বা মাঝের যেকোনো কোথাও একটি ছোট মার্বেল রাখেন, সেটি গড়িয়ে গিয়ে সেই ১ কেজি ওজনের বলের সাথে গিয়ে লাগতে চাইবে।কেননা সে একটি বাকানো পথ তৈরি করেছে যার ফলে তার থেকে কম ওজনের যাই দেওয়া হবে সেটা সেই বাক তৈরির উৎস্যের দিকেই যাবে। ঠিক যেভাবে নিচু গর্তে পানি গড়িয়ে যায়।

তবে উক্ত চাদরে যদি আপনি কোনো মার্বেলকে একটু অনুভূমিক বরাবর গতি প্রদান করতে পারেন তবে দেখবেন অনেক্ষণ ধরে তা ঘুরপাক খাবে।মাঝে মধ্যে গর্তে গিয়ে আবার বেরিয়ে এসে ঘুরতে থাকবে এবং শক্তি হারাতে হারাতে এক সময় থেমে গিয়ে গর্তে পতিত হবে।

এবার আসুন, গ্রহের বেলায় এটা কিভাবে কাজ করে। বিজ্ঞানীদের মতে, বিগব্যাং হওয়ার পরে আমাদের এই মহাবিশ্বের মধ্যে ৪র্থ মাত্রার একটি চাদর বিস্তৃত হয়ে গিয়েছিলো। যার উপরেই মহাবিশ্বের সকল কিছু অবস্থান করছে। বলে রাখা ভালো এটি একটি ৪র্থ মাত্রার চাদর যা ঘর্ষণহীন এবং যার নাম দেওয়া হয়েছে স্পেস-টাইম। 

তো এই চাদরও ঠিক রাবারের ওই চাদরের মতনই ক্রিয়া করে। উদাহরণ স্বরূপ, আমাদের সৌরজগতের মধ্যে সবচেয়ে ভারী বস্তু হলো সূর্য। অর্থাৎ, সবচেয়ে বেশি স্পেস-টাইমকে বাঁকাবেও সেই সূর্য। আর যেহেতু পৃথিবীসহ সকল গ্রহই সূর্যের নিকট নগণ্য, তাই তারা সবাই সূর্যের দিকেই ধাবিত হতে চাইবে ঠিক যেভাবে মার্বেলটি হতে চাইতো।

কিন্তু অনেকে এখানে প্রশ্ন করবে,মার্বেলটি তো একসময় থেমে গিয়ে কেন্দ্রে পতিত হয়েছিলো। তাহলে পৃথিবী এবং অন্যান্য গ্রহগুলো কেনো পতিত হচ্ছেনা?

উত্তর হলো, যেহেতু আগেই বলেছি স্পেস-টাইম একটি ৪র্থ মাত্রার ঘর্ষণহীন চাদর, তাই পৃথিবী বা অন্যান্য গ্রহগুলো ঘর্ষণহীন ভাবে ঘুরতে পারছে। যেহেতু ঘর্ষণহীনভাবে ঘুরছে, তাই তাদের শক্তিও হারাচ্ছে না। অর্থাৎ, মার্বেলের মতো গ্রহদের একদম কেন্দ্রে পতিত হবার কোনো রাস্তা নেই(এ নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে)। তাদের কোনো বিরাট বাহ্যিক শক্তি দ্বারা বিকৃত না করা হলে যতদিন সূর্য আছে, তারা ততোদিনই একই ভাবে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে থাকবে। 

এ কারণেই বলা হয় পৃথিবী এবং অন্যান্য গ্রহগুলো নির্দিষ্ট কক্ষপথে ঘুরছে। কারণ,তারা এখনও বিকৃত হয়নি। সূর্য স্পেস-টাইমকে বেশি বাকিয়েছে, তাই সূর্যের চেয়ে কম ভরের যারা রয়েছে সকলেই সূর্যের দিকে ধাবিত হতে চেয়েছে এবং তাদের পূর্বের আদিবেগের কারনে গোলাকার বা পরাবৃত্তাকারে অববরত প্রদক্ষিণ করে যাচ্ছে।

ঠিক প্রাকৃতিক উপগ্রহগুলোও কিন্তু এভাবেই কাজ করে। যেমন পৃথিবীর ভর চাঁদের চেয়ে বেশি। তাই পৃথিবী স্পেস-টাইমকে চাঁদের থেকে বেশি বাকিয়েছে এবং ফলস্বরুপ, চাঁদ পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করছে আর পৃথিবী সূর্যকে।

এই গ্রহের ঘুর্ণনের ব্যাপারে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে আমাদের কেন্দ্রমুখী এবং কেন্দ্রবিমুখী বলের সমান হওয়ার ব্যাখ্যাগুলো দেওয়া হয়। কিন্তু কেন্দ্রমুখী এবং কেন্দ্রবিমুখী বলগুলো কেনো সমান হলো? কিভাবে সমান হলো? এগুলোর ব্যাখ্যা কেউ চায় ও না,কেউ দেয় ও না। তাই, এটার মূল কারণ এবং থিওরি এটাই যা সবচেয়ে লেটেস্ট।

এবার আসা যাক বলের দিকে। আমরা সকলেই চারটি মৌলিক বলের নাম জানি। মহাকর্ষ বল তার মধ্যে একটি যা একটি দুর্বল বল। কেনো দুর্বল হয় এই মহাকর্ষ বল?

এটারও মূল থিওরি স্পেস-টাইমই।
যেমন আমাদের পৃথিবীর মধ্যেই যদি আমরা কিছু দূরে দূরে দুইটি কলম রাখি তারা কিন্তু মিলিত হচ্ছেনা। কারণ, তাদের অতো বেশি পরিমানের ভর নেই যার দ্বারা তারা স্পেস-টাইম বাকিয়ে অন্যদের আকর্ষণ করবে। তবে তারা যে আকর্ষণ করছে না এমনটি নয়।তারাও করছে, তবে তা এতোই কম যে তাদের অগ্রসর হওয়ার জন্য যথেষ্ঠ নয়।


অর্থাৎ, যেই বস্তু যতো বেশি স্পেস-টাইমকে বাকাতে পারবে, সে ততো বেশি অন্য বস্তুকে তার দিকে টেনে নেওয়ার প্রবণতা দেখাবে। এমনকি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অণুসমূহের কাছাকাছি আসার মধ্যেও এই স্পেস-টাইম এর প্রভাব রয়েছে। খেয়াল করলে দেখা যায় আকর্ষন+বিকর্ষণ+ প্রায় সকল ধরনের বলই এই স্পেস-টাইমের গর্তের উপরই নির্ভর করছে। গর্তই তৈরি করছে বল। যার কারণে এই মহাবিশ্ব এতো সুশীলভাবে চলছে,রহস্যজনকভাবে,সুন্দরভাবে।

ব্ল্যাকহোলও স্পেস-টাইমকে কাজে লাগিয়েই সমস্ত কিছুকে গ্রাস করে।যেহেতু ব্ল্যাকহোলগুলো মহাবিশ্বের সবচেয়ে ভারী বস্তুগুলো হিসেবে কাজ করে তাই এরা স্পেস-টাইমকে এতোই বাকায় যে তা ছিদ্রের ন্যায় হয়ে যায়।যার দরুন, উহার ভিতরে কিছু চলে গেলে তার ফিরে আসার মতো শক্তি থাকেনা।আলো 3X10^8 মি/সে. গতি নিয়েও তা থেকে বের হতে পারেনা। কেনো পারেনা? যেহেতু আলো মূলত ফোটন কণার প্রবাহ। আর কণা অবশ্যই স্পেস-টাইমের ফাঁদে পা দিতেই পারে স্বাভাবিক।

COMMENTS

নাম

android,1,digital-marketing,21,earning,30,freelancing,1,graphic-design,3,healts,1,jobs,4,news,2,technology,5,web-design,5,wordpress,1,
ltr
item
বাংলা হেল্পস: গ্রহ নক্ষত্র গুলো শুন্যে ভেসে আছে কিভাবে?
গ্রহ নক্ষত্র গুলো শুন্যে ভেসে আছে কিভাবে?
https://www.banglacyber.com/wp-content/uploads/2018/09/solar-system-in-bangla.jpeg
বাংলা হেল্পস
https://bangladeshelps.blogspot.com/2021/09/how-are-the-planets-and-stars-floating-in-the-air.html
https://bangladeshelps.blogspot.com/
https://bangladeshelps.blogspot.com/
https://bangladeshelps.blogspot.com/2021/09/how-are-the-planets-and-stars-floating-in-the-air.html
true
8937070593994531412
UTF-8
সব পোস্ট লোড করা হয়েছে কোনো পোস্ট পাওয়া যায়নি আরো দেখুন বিস্তারিত পড়ুন Reply Cancel reply Delete By হোম PAGES POSTS আরো দেখুন RECOMMENDED FOR YOU ক্যাটাগরি ARCHIVE অনুসন্ধান করুন সকল পোষ্টের আপনার অনুরোধের সাথে কোন পোস্টের মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি হোমে ফিরে যান Sunday Monday Tuesday Wednesday Thursday Friday Saturday Sun Mon Tue Wed Thu Fri Sat January February March April May June July August September October November December Jan Feb Mar Apr May Jun Jul Aug Sep Oct Nov Dec এইমাত্র ১ মিনিট আগে $$১$$ মিনিট আগে ১ ঘণ্টা আগে $$১$$ ঘণ্টা আগে গতকাল $$১$$ দিন আগে $$১$$ সপ্তাহেরও আগে 5 সপ্তাহেরও আগে Followers Follow এই প্রিমিয়াম কন্টেন্ট লক করা আছে পদক্ষেপ 1: শেয়ার করুন। পদক্ষেপ 2: আনলক করতে আপনি যে লিঙ্কটি শেয়ার করেছেন তাতে ক্লিক করুন সমস্ত কোড কপি করুন সমস্ত কোড সিলেক্ট করুন সমস্ত কোড আপনার ক্লিপবোর্ডে কপি করা হয়েছে কোড / টেক্সট কপি করা যাবে না, অনুগ্রহ করে [CTRL]+[C] (অথবা ম্যাক সহ CMD+C) টিপুন